টেলিযোগাযোগ খাতে মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে হবে: মোস্তফা জব্বার

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, মোবাইল টেলিযোগাযোগ খাতে মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে হবে। এই লক্ষ্যে মোবাইল অপারেটর ও এনটিটিএনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে অবকাঠামো শেয়ারিং জরুরি। অবকাঠামো শেয়ারিং মোবাইল টেলিযোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করবে। আমরা যদি যৌথভাবে অবকাঠামো ব্যবহার করতে পারি তাহলে বিদ্যুৎ ও অন্যান্য শক্তির সঠিক ব্যবহার হবে এবং সকল এলাকায় সকল অপারেটর সেবা প্রদানে সক্ষম হবে।

অবকাঠামো উন্নয়নকারীদেরকে সম্মিলিতভাবে টেলিকম নেটওয়ার্ক উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।

বুধবার সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে যৌথভাবে টেলিকম অবকাঠামো ব্যবহারের লক্ষ্যে টেলিটক, বাংলালিংক এবং সামিট টাওয়ার্স লিমিটেডের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, টেলিটক ব্যরবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম হাবিবুর রহমান, বাংলালিংক-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক অস এবং সামিট টাওয়ার্স লিমিটেড-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ আল ইসলাম বক্তৃতা করেন।

দেশে টেলিযোগাযোগ খাতের রূপান্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৯ বছরের গৃহীত কর্মসূচি তুলে ধরে মোস্তফা জব্বার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে চারটি মোবাইল অপারেটরকে দেশে মোবাইল সেবার অনুমোদন দিয়ে মোবাইল ফোন সাধারণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন। ভিস্যাটের মা‌ধ্যমে ইন্টারনেট প্রবর্তন এবং কম্পিউটারের ওপর থেকে ভ্যাট ট্যাক্স প্রত্যাহার করে ডিজিটাল প্রযুক্তি খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা তার হাত ধরেই শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু কর্তৃক আইটিইউ এবং ইউপিইউ এর সদস্য পদ অর্জন এবং ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপনের মধ্য দিয়ে দেশে ইন্টারনেট বিপ্লব বা তৃতীয় শিল্প বিপ্লবের সূচনা করেছেন।

তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারাবাহিকতায় টেলিকম এখন বড় হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে। এক সময়ে আমরা এসএমএস পাঠিয়ে খুশি হতাম কিন্তু এখন ফোরজি নেটওয়ার্ক যথেষ্ট মনে হয় না। ভয়েস কলের প্রাধান্য এখন আর নাই এটা ডাটা নির্ভর কলে রূপান্তরিত হচ্ছে। এই রূপান্তরের জন্য বড় হাতিয়ার হচ্ছে অবকাঠামো। চার অপারেটরকে চারটি টাওয়ারে যুক্ত করার পরিবর্তে একটি টাওয়ারে চার অপারেটরকে যুক্ত করতে পারলে ব্যরবহারকারীরা যেমন উপকৃত হবে তেমনি বিনিয়োগও কমে আসবে। ফলে অপারেটররাও লাভবান হবে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, সামনের দিনে ফাইভজিতে রূপান্তরের সময় অনেক বেশি অবকাঠামোর দরকার হবে। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক অপারেটরদের জন্য আলাদা আলাদা অবকাঠামো করা অনেক বেশি কঠিন হবে। যৌথভাবে টেলিকম অবকাঠামো ব্যবহারের লক্ষ্যে বাংলালিংক, টেলিটক এবং সামিট টাওয়ার্স লিমিটেডের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যাবাদ জ্ঞাপন করেন।

মন্ত্রী অন্য অপারেটরসমূহ অনুরূপভাবে এগিয়ে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব অবকাঠামো শেয়ারিং চুক্তি মোবাইল টেলিযোগাযোগ খাতের জন্য এক ঐতিহাসিক মাইলফলক বলে উল্লেখ করেন। তিনি সংশ্লিষ্ট পক্ষ সমূহের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে মোবাইল টেলিযোগাযোগ খাতের অগ্রগতি আরও বেগবান হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাংলালিংক-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক আস, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম হাবিবুর রহমান এবং সামিট টাওয়ার্স লিমিটেড-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ আল ইসলাম নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

চুক্তিটির অধীনে এই দুই টেলিকম অপারেটর টাওয়ার শেয়ারিং নীতিমালাসহ সব নির্দেশিকা ও আইন অনুযায়ী নিজেদের মধ্যে অবকাঠামো শেয়ারিং করবে। সামিট টাওয়ার্স লিমিটেড এই উদ্যোগে সব ধরনের প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করবে।